ছাত্রলীগের রগকাটা-কব্জিকাটার খন্ড চিত্র

ছাত্রলীগের রগকাটা-কব্জিকাটার খন্ড চিত্র

প্রকাশ ২১ মে ২০১১ : দার্শনিক গোয়েবলৎসের একটি সুত্র হচ্ছে কোন একটি মিথ্যাকে সত্য বলে প্রমানিত করার জন্য সেই মিথ্যাকে ১ শত বার বলাই যথেষ্ট। বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতিতে সম্ভবত দার্শনিক গোয়েবলৎসের সেই সুত্রটিই টিকে গেছে। কারন যারা রগকাটার সাথে আদৌও সম্পর্কিত নয় তারা আজ রগকাটার দল আর যারা প্রকৃতপক্ষে প্রতিনিয়ত রগকাটে তাদের বেলায় এ কথাটি প্রযোজ্য হয়না। ১৯৭৭ সালে ছাত্রশিবির নামক একটি আদর্শিক ছাত্রসংগঠনের জন্ম হয় বাংলাদেশে। যারা এই আদর্শিক সংগঠনটিকে আদর্শ দিয়ে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয় তারা তাদের সর্বোচ্চ পেশীশক্তি এ সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে। কিন্তু পেশীশক্তি ব্যবহার করে এমনকি এই সংগঠনের শতশত নেতা কর্মীকে হত্যা করার পরও যখন সংগঠনটিকে দমাতে পারলোনা তখন কল্প কাহিনীর মত প্রচার করতে থাকল এই সংগঠনটি রগ কাটে। কিন্তু মিথ্যা এই অভিযোগটি ছাত্রশিবিরের ৩৫ বছরেও প্রমান করতে পারেনি কেউ। এক সময় মিডিয়া সহ বিরোধী সবাই রগকাটা শব্দটিকে বেশী ব্যবহার করতো। মাঝে এটিকে আর তেমন ব্যবহার করতে দেখা যায়নি. কিন্তু ছাত্রশিবির যখন সরকারের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে রাজপথে প্রতিবাদ মুখর হয়েছে. তখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর শিবিরকে দমন করার বার বার তেজোদ্বীপ্ত হুশিয়ারিতেও কোন কাজ হচ্ছে না দেখে এমন পরিস্থিতিতে দেশের তরুণ প্রজন্মের দৃষ্টিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য “রগকাটা” শব্দটিকে আবার ঢাল হিসেবে ব্যবহার করার চক্রান্ত শুরু হয়েছে. কিন্তু এদেশের তরুণরা আর ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে এ ধরনের মিথ্যাচারকে প্রশ্রয় দেয়না এবং বিশ্বাসও করেনা। কারন একটি মিথ্যাকে ব্যাপক ভাবে প্রচার করা যায কিন্তু সত্য বলে প্রতিষ্ঠিত করা যায়না। প্রকৃতপক্ষে রগকাটার সাথে কারা যুক্ত? কারা প্রতিনিয়ত রগকাটে? কারা একে অপরকে কোপায়! সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার বিবরন সামনে তুলে ধরলেই সকলের নিকট দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট হবে যে সত্যিকার অর্থে ছাত্রলীগই রগকাটায় ওস্তাদ বরং রগকাটায় তাদের সাধ মিটেনা বলেই কব্জিও কেটে নেয় তারা। ছাত্রলীগের রগকাটা কব্জিকাটার টুকরো কিছু তথ্য তুলে ধরলাম।
২৮ অক্টোবর ২০০৬: জোট সরকারের ৫ বছর পুর্তি সমাবেশে হামলা চালিয়ে ছাত্রশিবির চট্রগ্রাম মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মু. জাহিদুল ইসলামের দু-পায়ের রগ কেটে দিয়েছে ছাত্রলীগ ক্যডাররা। মুমুর্ষ অবস্থায় তাকে চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।(সুত্রঃ দৈনিক সংগ্রাম). ২৬ আগষ্ট ২০০৮: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএম হলের ছাত্রলীগ নেতা সৈকতকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে দুই পায়ের এবং এক হাতের রগ কেটে দিয়েছে একই দলের প্রতিদ্ধন্দী সুমন গ্রুপের কর্মীরা। গতকাল রাত ৮টায় এসএম হলের ভেতর এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় সৈকতকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত ডাক্তাররা তাকে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে পাঠান। এ দিকে সৈকত গ্রুপের কর্মী বান্না বলেন, সৈকত একা হলে যাচ্ছিল। তার সাথে কেউ থাকলে সে আহত হতো না। সুমন গ্রুপের কর্মীরা তাকে নির্মমভাবে কুপিয়েছে বলে সে জানায়। (সূত্র: নয়া দিগন্ত). ১৯ অক্টোবর ২০০৮: ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ছাত্রলীগের সম্মেলনপূর্ব কর্মিসভা পণ্ড হয়ে গেছে। এ সময় দু’পরে হামলা-পাল্টা হামলায় আহত হয়েছেন কমপে ১০ জন। এদের মধ্যে অপু তাহের নামে দশম শ্রেণীর এক ছাত্রকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে দুই হাতের রগ কেটে দেয়িছে ছাত্রলীগের এক গ্রুপের ক্যাডাররা। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আহত ছাত্রলীগ নেতা জহুরুল ইসলাম জনিকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। (সুত্র: বাংলানিউজ২৪ ডটকম বিডি).
১০ জানুয়ারি ২০০৯: ছাত্রলীগও রগ কাটে? শিরোনামে নিউজ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া হলে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের মধ্যে এই ঘটনা ঘটে। (সুত্র: প্রথম আলো). ১৯ ডিসেম্বর ২০০৯: দিনাজপুরে ছাত্রলীগ কর্মীর রগ কেটেছে ছাত্রলীগ শিরোনামে দৈনিক সমকালের খবর। আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দিনাজপুর টেক্সটাইল ইন্সটিটিউটে নূরুজ্জামান পাঠান টুকটুক নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীর দুপায়ের রগ কেটে দিয়েছে ছাত্রলীগেরই প্রতিপ গ্রুপ। শত শত ছাত্র-ছাত্রী ও জনসম্মুখে ছাত্রলীগ ক্যাডাররা নুরুজ্জামান পাঠান টুকটুককে হাসুয়া দিয়ে এলোপাথারী কোপাতে থাকে। এরপর তারা খুর দিয়ে তার দু’পায়ের রগ কেটে দেয়। ক্যাম্পাসে তার রক্তে প্রায় বন্যা বয়ে যায়। রক্ত দেখে বেশ কয়েকজন ছাত্রী জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। রক্তাক্ত অবস্থায় নূরুজ্জামানকে প্রথমে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও সংকটাপন্ন অবস্থায় পরে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। তাৎণিকভাবে কলেজের চলতি পরীক্ষা বাতিল করে ইন্সটিটিউট বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপ। সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের উর্দ্ধতন কর্তৃপ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।.
১৯ ফেব্রুয়ারী ২০১০: যশোরে খেলাফত মজলিশের কর্মীর কব্জি কর্তন করেছে ছাত্রলীগের ক্যাডাররা। এ সময় ছাত্রলীগ ক্যাডাররা হাত থেকে কব্জি বিচ্ছিন্ন করে উল্লাসও করে। ১৪ এপ্রিল ২০১০: গাংনীতে বিএনপি নেতার হাত-পায়ের রগ কর্তন শিরোনামে প্রথম আলোর নিউজ। জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে মেহেরপুরের গাংনীর ষোলটাকা ইউনিয়নের জোড়পুকুর গ্রামে আওয়ামী লীগ নেতা বিস্কুটের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা এক বিএনপি নেতার হাত ও পায়ের রগ কেটে দিয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে সন্ত্রাসীরা বিএনপির নেতা রিয়াজ উদ্দিন মাস্টারের (৬২) বাড়িতে ঢুকে এ কাণ্ড ঘটায়। গুরুতর আহত অবস্থায় রিয়াজ উদ্দিনকে প্রথমে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁকে উন্নততর চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সগীর মিয়া জানান, আহত বিএনপির নেতার পক্ষ থেকে থানায় কোনো মামলা না হওয়ায় পুলিশ অপরাধীদের আটক করতে পারেনি।. ২৮ এপ্রিল ২০১০: রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) ছাত্রলীগের আল-আমিন ও হারন গ্রুপের সাথে রেজা গ্রুপের সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে রেজা গ্রুপের দুই কর্মী গুরুতর আহত হয়েছে। এদের মধ্যে ১ জনের পায়ের রগ কেটে দেয়া হয়েছে। গুরুতর অবস্থায় রাতেই আহত দুই জনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহতরা হলেন রুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র ও রেজা গ্রুপের ছাত্রলীগ কর্মী আখতার হোসেন শাহীন ও একই বিভাগের রুবেল। রুয়েট প্রশাসন ও মতিহার থানা পুলিশ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, যেকোন অপ্রীতকর ঘটনা এড়াতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। (সুত্র:ক্যাম্পাস মিরর).
০১ আগষ্ট ২০১০: ঝিনাইদহে সংঘর্ষে নিহত এক শিরোনামে প্রথম আলোর নিউজ। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার দোগাছি গ্রামে আওয়ামী লীগের দুই পরে সংঘর্ষে তোতা মণ্ডল নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছগির মিঞা জানান, ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনকে সামনে রেখে দোগাছি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইসহাক আলী জোয়ার্দ্দার ও আওয়ামী লীগের নেতা জিন্নাহ আলী পরে মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ছাত্রলীগও জড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে প্রতিপরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে বছির উদ্দীনের ডান পা এবং তোতা মণ্ডলের বাম হাত কবজি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা দুইটার দিকে তোতার মৃত্যু হয়। গ্রামে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ওসি ছগির জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। নিহতের ঘটনায় থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।.ঝিনাইদহ শহরে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা ছাত্রদল নেতা আরজুকে কুপিয়ে পায়ের রগ কেটে পঙ্গু করে দিয়েছে_৯ এপ্রিল ২০১১ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১০: শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শফিকুর রহমান শফিকের নেতৃত্বে একদল যুবলীগ ক্যাডার মেলান্দহ বাজার থেকে যুবলীগ কর্মী পিন্টুকে ধরে নিয়ে যায়। বারই পাড়া এলাকায় নিয়ে বেধড়ক পিটুনি দিয়ে তার হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পিন্টুকে উদ্ধার করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।.
৩০ অক্টোবর ২০১০: পটুয়াখালি বাউফল উপজেলার যুবদল নেতা শফিকুল ইসলাম সফির হাত ও পায়ের রগ কেটে দিয়েছে বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও বগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোতালেব হাওলাদারের নির্দেশে ছাত্রলীগ কর্মীরা। আহত যুবদল নেতা সফির স্ত্রী শিল্পী বেগম বাদী হয়ে ছাত্রলীগ, আওয়ামীলীগ ও যুবলীগের ১৩ নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে ৩ নভেম্বও বাউফল থানায় ১টি মামলা দায়ের করেন। ১৬ ডিসেম্বর ২০১০: অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে মাদারীপুর সদর থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জামাল হাওলাদারের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ শহরের বাদামতলী এলাকার বাসিন্দা আওয়ামীলীগ কর্মী মোস্তফার ওপর হামলা চালিয়েছে। এসময় তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে বেধড়ক কুপিয়ে মোস্তফার ডান পায়ের রগ কেটে দিয়েছে। আহত মোস্তফাকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রাত সাড়ে ৯টার দিকে জেলা শহরের প্রধান সড়কে নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের ব্যক্তিগত কার্যালয়ের সামনে এই হামলা হয়। পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুব হাওলাদার সাংবাদিকদের জানান, ছাত্রলীগের একদল কর্মীই একাজ করেছে। (সুত্র:বিডি নিউজ ২৪ ডটকম).
১৯ জানুয়ারি ২০১১: যশোর শহরের ষষ্ঠীতলাপাড়া এলাকার ছাত্রলীগ ক্যাডার রেমনের নেতৃত্বে পাঁচ-ছয় সন্ত্রাসী যশোর সরকারি এমএম কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের ছাত্র সার্কিট হাউসপাড়ার অনিক হাসান ও খড়কি এলাকার তৌকির মোহাম্মদ তরুণের উপর হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে তরুণের হাতের রগ কেটে দিয়েছে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা। অন্য ছাত্ররা তাদের উদ্ধার করে যশোর সদর হাসপাতালে পাঠায়। (সুত্র: দৈনিক সমকাল). ৮ ফেব্রুয়ারী ২০১১: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের টুকিটাকি চত্ত্বরে ছাত্রদল কর্মী অলিনের উপর ছাত্রলীগ কর্মী নয়নের নেতৃত্বে ৭-৮ জন ক্যাডার হামলা চালায়। এসময় ছাত্রলীগ ক্যাডাররা অলিনকে এলোপাথারি কুপিয়ে তার হাতের রগ কেটে দেয় এবং বুকে ছুরিকাঘাত করে গুরুত্বর আহত করে। আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু তার অবস্থার অবনতি দেখে পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় ছাত্রদলের রাবি শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক সালাউদ্দিন রানা ছাত্রলীগকর্মী নয়নকে প্রধান আসামী করে রকি (দর্শন) সালাম, দ্বীপসহ অজ্ঞাতনামা আরোও ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।.
১৬ ফেব্রুয়ারী ২০১১: নওগাঁ সদর উপজেলার স্থানীয় ছাত্রলীগের কর্মী জুবায়ের আলম লিটন এর হাত ও পায়ের রগ কেটে এবং পেটে ছুরি দিয়েছে ছাত্রলীগের প্রতিপ গ্রুপ। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহমদ হাশমী জানান, জুবায়েরের দুই হাত ও পায়ের রগ কাটা ছিল। এ ছাড়া পেটে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন ছিল। ওসি বলেন, ঠিকাদারি কাজের ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে জুবায়েরকে খুন করা হয়েছে বলে তাঁরা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছেন। এ ব্যাপারে সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। (সুত্র:বাংলানিউজ২৪ ডটকম). ৩ এপ্রিল ২০১১: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজ দলের কর্মীকে ছুরিকাঘাত করে ডান পায়ের রগ কেটে দিয়েছে ফিরোজ নামের এক ছাত্রলীগ কর্মী । রবিবার বেলা সাড়ে এগারটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বিজ্ঞান ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আহত ওই ছাত্রলীগ কর্মীর নাম জাহিদ। গুরুতর আহত অবস্থায় জাহিদকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জাহিদ প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র। তিনি ছাত্রলীগের রগকাটা ফিরোজ গ্রুপের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। এ ঘটনায় জাহিদ মতিহার থানায় মামলা করতে চাইলে ফিরোজ তাকে মামলা না করার হুমকি দেয়। (সুত্র: জিনিউজ বিডি ডটকম).
৯ এপ্রিল ২০১১: ঝিনাইদহে ছাত্রদল কর্মীর পায়ের রগ কর্তন শিরোনামে দৈনিক সমকালের নিউজ। ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুর সিটি কলেজ লাইব্রেরির সামনে গতকাল রাতে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা ছাত্রদল নেতা আরজুকে কুপিয়ে পায়ের রগ কেটে পঙ্গু করে দিয়েছে। আহত অবস্থায় আরজুকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত আরজু ৮ নং ওয়ার্ড ছাত্রদল নেতা। সে ঝিনাইদহ শহরের খাজুরা গ্রামের মাজেদুল হকের ছেলে। পুলিশ জানায়, রাত ৮টার দিকে আরজু বাড়ি থেকে শহরে যাচ্ছিল। এসময় ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুর সিটি কলেজ লাইব্রেরির সামনে ওঁত্ পেতে থাকা ছাত্রলীগ কর্মী রাশেদ, রাকিব, আরিফ, রাজু ও ইমরান আরজুকে কুপিয়ে তার বাম পায়ের রগ কেটে দেয়।. ১৪ এপ্রিল ২০১১: নাটোরে ছাত্রলীগ কর্মীর রগ কর্তন শিরোনামে প্রথম আলোর রিপোট। অভ্যন্তরীন কোন্দলের জের ধরে ১৩ এপ্রিল বিকেলে কিছু ছাত্রলীগ কর্মী সাব্বির নামে অপর ছাত্রলীগ কর্মীর হাতের রগ কেটে দেয়। ছাত্রলীগ কর্মী সাব্বিরের রগ কাটার মামলায় সোমবার রাতে নাটোর সদর সার্কেলের পুলিশ সুপার আপেল মাহমুদের নেতৃত্বে শহরের কান্দিভিটুয়া এলাকায় এক বিশেষ অভিযান চালিয়ে শরিফ নামে এক ছাত্রলীগ কমীকে আটক করা হয়। মঙ্গলবার সকালে তাকে কোর্টে চালান দেয়া হয়েছে। এর আগে এই মামালায় আজিজুল ইসলাম নামে আরো এক ছাত্রলীগ কর্মীকে ঘটনার পর পরই আটক করে কোর্টে চালান দেয়া হয়েছিল। নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, এ ঘটনায় জড়িত বাকীদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।.
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১০: জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলায় গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ছাত্রলীগের কর্মী শফিকুল ইসলাম ওরফে পিন্টুর হাত-পায়ের রগ কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মেলান্দহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিল্লাল উদ্দিন জানান, থানার পুলিশের একটি টহল দল সন্ধ্যার দিকে থানায় ফেরার পথে মেলান্দহ পৌরসভার বাড়ইপাড়ার একটি সড়কে কয়েকজনের মধ্যে ধস্তাধস্তি দেখে গাড়ি থামায়। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় পিন্টুকে উদ্ধার করে। এ সময় শফিকুল ইসলাম ওরফে হাতকাটা শফিক, আনিছুর রহমান ও তানভীর নামের তিনজন পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।(সুত্র: প্রথম আলো).
২০ ফেব্রুয়ারি ২০১১: মৌলভীবাজারে যুবলীগ নেতার রগ কেটেছে ছাত্রলীগ কর্মীরা। মৌলভীবাজার, (শীর্ষ নিউজ ডটকম): মৌলভীবাজারে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তাজের অনুসারীরা জেলা যুবলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম হকের পায়ের রগ কেটে দিয়েছে। আজ রোববার দুপুরে শহরের শ্রীমঙ্গল রোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তাজ ও সেলিম দু’জনের বিরুদ্ধেই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, জেলা যুবলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম হকের ভাগ্নে শিমুলের সাথে ছাত্রলীগ কর্মী রফির মারামারি হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুপুর ১টার দিকে ছাত্রলীগ কর্মীরা শহরের শ্রীমঙ্গল সড়কে সেলিম হকের ওপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে হামলাকারীরা সেলিমের পায়ের রগ কেটে দেয়। গুরুতর আহত অবস্থায় সেলিমকে প্রথমে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল ও পরে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ছাত্রলীগ সভাপতি মোহাম্মদ জাকারিয়া শীর্ষ নিউজ ডটকমকে জানান, সেলিমের অনুসারীরা প্রথমে তাদের কর্মীদের ওপর কলেজে হামলা চালায়। এরপর শ্রীমঙ্গল রোডে সন্ত্রাসী হামলায় সেলিম আহত হন। তবে হামলাকারী কারা সেটা তাদের জানা নেই। এ ঘটনায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তাজ বা তিনি জড়িত নন বলে জানান। (সুত্র: শীর্ষ নিউজ).
১০ অক্টোবর ২০১০: বনপাড়া বাজারের স্থানীয় দোকানদার ও পথচারীরা জানান, বিএনপির নেতা-কর্মীরা উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে সানাউল্লাহর নেতৃত্বে মিছিল নিয়ে বেলা সোয়া ১১টার দিকে পাবনা-নাটোর সড়ক হয়ে বনপাড়া বাজারে আসেন। মিছিলটি পাটোয়ারী হাসপাতালের সামনে পৌঁছালে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা লাঠিসোঁটা, রড ও চায়নিজ কুড়াল নিয়ে হামলা চালায়। শত শত দোকানি ও পথচারীর সামনে সানাউল্লাহর দুই পায়ের রগ কেটে দেয় এবং মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে তারা। সানাউল্লাহ হামলাকারীদের কাছে জীবন ভিা চান। তিনি ‘বাঁচাও, বাঁচাও’ বলে চিৎকার করেন। কিন্তু হামলাকারীরা তাঁকে উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকে। এ সময় পুলিশের নিউজ) একটি পিকআপ ঘটনাস্থলের পাশ দিয়ে দণি দিকে চলে যায়। কিন্তু পুলিশের কেউ তাঁকে রা করতে এগিয়ে আসেনি। (প্রথম আলো)।
১ মে ২০১১: ছাত্রলীগে কোন্দল, কর্মীর রগ কর্তন শিরোনামে প্রথম আলোর নিউজ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে পৃথক হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে অন্তত পাঁচজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সৌমেন দাশের দুই হাত ও দুই পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সঞ্জয় দেব নামে ছাত্রলীগের এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে তানজিম ও সৌমেনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তানজিমের শরীরের বিভিন্ন অংশে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সৌমেনের হাত ও পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়। আরিফকে বেধড়ক পেটানো হয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে এবং পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, সকালে কাটাপাহাড় সড়কে হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে সঞ্জয় নামের এক ছাত্রলীগ কর্মীকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনার পর ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত ৫০ জন পুলিশ সদস্য নিয়োগ করা হয়েছে। পৃথক হামলার ঘটনায় কর্তৃপ ছাত্রলীগের সাতজন কর্মীকে এক বছরের জন্য বহিস্কার করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বনবিদ্যা ও পরিবেশ বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের শিক মো. আল-আমীনকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
২৭ এপ্রিল ২০১১: নিজ সমর্থকদের কোপালেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা শিরোনামে প্রথম আলোর রিপোর্ট। আধিপত্য বিস্তার করা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হলে সংগঠনটির দুই পরে সংঘর্ষে তাঁরা আহত হন। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের রণহুঙ্কার, আহতের আর্তনাদ, চাপাতি-রামদার ঝনঝনানি আর গুলির শব্দে গতকাল মঙ্গলবার ভোরে ঘুম ভাঙে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের ছাত্রদের। সূর্য উঁকি দেওয়ার আগেই হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের চরদখলের কায়দায় এ উন্মত্ততা দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সাধারণ ছাত্ররা। হলে আধিপত্য বিস্তারের জন্য ছাত্রলীগের কর্মীরা এলোপাতাড়ি কুপিয়েছেন নিজ সংগঠনের কর্মীদের। কেটে দিয়েছেন অনেকের হাত-পায়ের রগ। মুহসীন হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ মুহাম্মাদ আলী ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের সমর্থকেরা একজোট হয়ে সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন মাহির কর্মীদের ওপর হামলা চালালে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে ৬০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে অবস্থার অবনতি হওয়ায় দুজনকে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা পরস্পরকে এভাবে কোপাতে পারে এমন বীভৎসতা দেখে আমরা আতঙ্কিত। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা নেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপ।’ উপাচার্যের ঘোষণার পর গতকাল রাতে এ ঘটনা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেন। এতে হল শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককেও আসামি করা হয়। সংঘর্ষের পর হলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। হলের ছাত্ররা জানিয়েছেন, সংঘর্ষ চলাকালে ছাত্রলীগের কর্মীরা চাপাতি ও রামদা দিয়ে পরস্পরকে কুপিয়েছেন। কেটে দেওয়া হয় অনেকের হাত-পায়ের রগ। গুলি ও বোমার শব্দে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সাধারণ ছাত্ররা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর আমজাদ আলী বলেন, আহত ৪৪ জনকে হল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এঁদের মধ্যে হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন মাহি ও লোকপ্রশাসন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মারুফ হাসানকে পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। মাহির হাত-পায়ের রগ কেটে দিয়েছে প্রতিপ। তাঁর গায়ে গুলিও লেগেছে। সংঘর্ষের ঘটনায় মুহসীন হল শাখা ছাত্রলীগের কমিটি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। এবং মুহসীন হল সভাপতি মুহাম্মাদ আলীসহ ১১ জনকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ঘটনা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেন। এতে ১০ জন ছাত্রসহ অজ্ঞাতনামা ২৫-৩০ জনকে আসামি করা হয়।
পাবনার ঈশ্বরদীতে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে রামদা ও চাপাতির এলোপাতাড়ি কোপে মিন্টু (২৭) নামের এক যুবলীগকর্মীর দুই হাতের কব্জি কেটে হাত থেকে আলাদা করে দিয়েছে ছাত্রলীগেরই কয়েকজন ক্যাডার। এসময় মিন্টুর ডান হাতের কব্জি কেটে হাত থেকে আলাদা হয়ে রাস্তায় পড়ে যায়। শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার গোকুলনগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত যুবলীগকর্মী মিন্টু গোকুল নগর এলাকার জনৈক ইয়াদ খাঁর ছেলে। ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সামিউল আলম এ বিষয়ে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হচ্ছে। থানার ডিউটি অফিসার জহুরুল আলম বলেন,আহত মিন্টুকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তার অপর হাতটিও কেটে ফেলা হয়েছে।(সুত্র: অনলাইন নিউজ বিবেক বার্ত).
১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪: জাতীয় সংসদে স্বতন্ত্র এমপি জোটের চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজি মোহাম্মদ সেলিম সোমবার মাগরিবের নামাজের পর পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘সরকার বলছে সন্ত্রাসীদের তালিকা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু কিছুই হচ্ছে না। দেশে মানুষ খুন হচ্ছে। গুম হচ্ছে। অন্যরা রগ কাটছে আর ছাত্রলীগ কাটছে কব্জি ও মাথা। রাজশাহীর ঘটনা সরকারের মাথা হেঁট করে দিয়েছে। টাঙ্গাইলে ছাত্রলীগ একজনের কব্জি কেটেছে।’
৯ ডিসেম্বর ২০১২: ১৮ দলীয় জোটের ডাকা অবরোধ কর্মসূচী চলাকালে সকাল পৌনে ৯টার দিকে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কের কাছে ছাত্রশিবির ভেবে বিশ্বজিৎ দাস নামক পথচারী এক দর্জি দোকানিকে নির্মমভাবে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের ক্যাডাররা। সেদিন পৈশাচিকতায় নির্মম নির্যাতনে মেতে উঠে ছাত্রলীগের অস্ত্রধারী ক্যাডাররা। তার আত্মচিৎকারে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠছিল। কিন্তু একটুও দয়া হয়নি পাষন্ড খুনী ছাত্রলীগ ক্যাডারদের। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রক্তাক্ত-ক্ষতবিক্ষত করে প্রকাশ্যে তাকে মর্মান্তিকভাবে কুপিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। কী নির্মম, কী করুণ এ হত্যা! টেলিভিশন ও পত্রপত্রিকার কল্যাণে ছাত্রলীগের পাষণ্ডরা কীভাবে বিশ্বজিৎকে কুপিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে, তা অসংখ্য মানুষ দেখেছে। হত্যাকারীরা সবাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। জড়িতদের মধ্যে ছাত্রলীগের উল্লেখযোগ্য নেতাকর্মীরা হলেন, রফিকুল ইসলাম ওরফে শাকিল, মাহফুজুর রহমান ওরফে নাহিদ, জিএম রাশেদুজ্জামান ওরফে শাওন, কাইয়ুম মিয়া, ইমদাদুল হক ওরফে এমদাদ, সাইফুল ইসলাম, রাজন তালুকদার ও নূরে আলম ওরফে লিমন।
কুমিল্লায় শিবির নেতার রগকর্তন:২০১৩ সালের ৬ নভেম্বর দৈনিক ইত্তেফাকে’র একটি শিরোনামে দেখা যায়, ‘শিবিরের রগ কাটল ছাত্রলীগ’। প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে ঘটনার বিবরণে বলা হয়, কুমিল্লার আমজাদের বাজারস্থ দুর্গাপুর গ্রামের শিবিরকর্মী ঝুমন ও মনির হোসেনের সাথে এক সিএনজি চালকের বাকবিতা- হয়। পরে সিএনজি চালক একই গ্রামের ছাত্রলীগকর্মী পারভেজসহ কয়েকজনকে বিষয়টি জানায়। হঠাৎ করেই পারভেজের নেতৃত্বে কয়েকজন ছাত্রলীগকর্মী প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে বাজারে প্রবেশ করে শিবিরকর্মী ঝুমন ও মনিরের হাতের রগ কেটে দেয়। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রামে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
১৬ জুন ২০১৪: রাবিতে দিনে দুপরে প্রকাশ্যে শিবির নেতার পা কর্তন শিরোনামে দেশের প্রায় সবগুলো মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার করা হয় যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পুলিশের সামনে প্রকাশ্যে এক শিবির নেতার পা কেটে বিচ্ছিন্ন করেছে ছাত্রলীগের নেতারা। পা কাটার পর ছাত্রলীগ নেতারা ঐ শিবিরকর্মীর বুকে গুলি করে ফেলে যায়। সোমবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে শহিদুল্লাহ কলা ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আহত এ শিবির নেতার নাম রাসেল। আহত অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি ফাইন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র এবং নবাব আব্দুল লতিফ হল শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ।
এখানে রগকাটার যতগুলো ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে তা শুধুমাত্র দেশের বহুল প্রচারিত জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়া নিউজগুলোর কিয়দাংশ মাত্র। এ কথাগুলো মিথ্যা বলে চালিয়ে দেয়ার সুযোগ নেই। কারন কত তারিখে, কোথায় কার রগকাটা হয়েছে এখানে তার ঠিকানাসহ নাম, যে ব্যক্তি বা যে গ্র“পের নেতৃত্বে রগকাটা হয়েছে তাদের নাম, সংশ্লিষ্ট কতৃপ কিংবা পুলিশের ভাষ্য, আহত হওয়ার পর কোন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তার রিপোর্ট এবং এ সংক্রান্ত ঘটনায় মামলা দায়েরের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। সুতরাং প্রিয় পাঠক সত্যিই যদি আপনি বিবেক সম্পন্ন মানুষ হয়ে থাকেন, সত্যিই যদি জ্ঞানপাপীর মত আচরণ না করে থাকেন তাহলে আজই রগকাটার আজগুবি মিথ্যা চুড়ে ফেলে দিয়ে স্বীকার করে নিন যে ছাত্রলীগই এই দেশে প্রকৃত রগকাটার দল। শুধুমাত্র রগকাটার দল বললে ভুল হবে বরং যারা নিজ দলীয় সংগঠনের কর্মীকে কোপাতে দ্বীধা করেনা, কব্জি কাটতে পরোয়া করেনা তারা কতটা নৃশংস ও ভয়াবহ আচরণ করতে পারে বিরোধী দল ও মতের কর্মীদের সাথে তা সহজেই অনুমেয়।
লেখক: এমফিল গবেষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। http://www.youtube.com/watch?v=piSkhyfcniY