পরিচয়

 

মুহাম্মদ ইয়াছিন আরাফাত, কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট উপজেলার রায়কোট দক্ষিণ ইউনিয়নের ডাকাতিয়া নদীর অববাহিকায় পূর্ব বামপাড়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৮৭ সালের ২ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আলহাজ্জ ডাঃ আবদুস সোবহান একজন পল্লী চিকিৎসক ও ব্যবসায়ী। চিকিৎসক পিতা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক কাজে মানুষের জন্য নিবেদিতপ্রাণ একজন ব্যক্তিত্ব। মাতা আলহাজ্জ রওশন আরা বেগম একজন গৃহিণী। ৪ ভাই ৩ বোনের মধ্যে তিনি ৬ষ্ঠ এবং ভাইদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ। প্রাথমিক পড়াশোনা শুরু হয় বেলটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেখানে তিনি ৪র্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। পাশাপাশি তিনি মক্তবে কুরআন ও ইসলামী শিক্ষা লাভ করেন। মাদরাসায় শিক্ষালাভের উদ্দেশ্যে ১৯৯৪ সালে পূর্ব বামপাড়া মাদানীয়া দাখিল মাদরাসায় ৪র্থ শ্রেণিতে ভর্তি হন। এর কিছুদিন পর মনতলী রহমানিয়া সিনিয়র ফাযিল মাদরাসায় ৪র্থ শ্রেণিতে পুনরায় ভর্তি হন। সেখানে তিনি ৪র্থ থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। ফেনীর ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আল জামেয়াতুল ফালাহিয়া কামিল মাদরাসা থেকে মানবিক বিভাগে ২০০১ সালে দাখিল ও ২০০৩ সালে আলিম, সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়া ঢাকা থেকে ২০০৫ সালে ফাজিল ও ২০০৭ সালে কামিল (হাদীস) পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। মাদরাসা শিক্ষার পাশাপাশি ২০০৪-২০০৫ শিক্ষা বর্ষে তিনি প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে আরবী সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষে তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া হতে এমফিল ডিগ্রি (মাস্টার্স অব ফিলোসোফি) অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি পিইচডি গবেষণার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

ফেনী থেকে প্রকাশিত ‘মাসিক কিশোর পত্র’ পত্রিকায় ২০০৩ সালে প্রথম কবিতা প্রকাশের মাধ্যমে লেখালেখিতে হাতেখড়ি তার। সমসাময়িক বিষয়ে দৈনিক নয়াদিগন্ত, যুগান্তর, সংগ্রাম, যায়যায়দিন, ইনকিলাব, সাপ্তাহিক সোনার বাংলা, মাসিক রেনেসাঁসহ জাতীয় দৈনিকে বহু কলাম প্রকাশিত হয়েছে তার। এছাড়াও ছাত্র সংবাদ, কিশোর কণ্ঠসহ বিভিন্ন সাহিত্য সাময়িকী ও জাতীয় পত্রিকায় মানুষের জীবনাচরণ, নেতৃত্ব, সমসাময়িক বিষয়াবলি এবং ইসলামিক বিভিন্ন ইস্যুতে লেখালেখি করছেন নিয়মিত। ইতোমধ্যে, “জীবন বদলে যাবে” এবং “শিকল পরা হাতের পরশ” নামে তার দুইটি বই প্রকাশিত হয়েছে।

দ্বীন প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়দ্বীপ্ত কাফেলা, মেধাবী ছাত্রদের প্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের আদর্শিক কার্যক্রমে আকৃষ্ট হয়ে ১৯৯৮ সালে এ সংগঠনে যোগ দেন তিনি। ফেনীতে পড়াকালীন সময়ে তিনি ১৯৯৯ সালে কর্মী ২০০১ সালে সাথী ও ২০০৩ সালে ছাত্রশিবিরের সদস্য হন। তিনি ঢাকা আলিয়া, মতিঝিল থানা ও ঢাকা মহানগরী পূর্ব শাখার বিভিন্ন দায়িত্ব পালন শেষে ২০১১ সালে ঢাকা মহানগরী পূর্ব শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০১২ সালে কেন্দ্রীয় এইচআরডি সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ ও ২০১৪ সালে তিনি কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক ও ২০১৫ সালে কেন্দ্রীয় অফিস সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন ২০১৬ সালে। ২০১৭ সেশনে মুহাম্মদ ইয়াছিন আরাফাত সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০১৮ সেশনেও তিনি বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি পুনঃনির্বাচিত হন।
ছাত্র জীবন শেষ করে ২০১৯ সালের ১১ ই জানুয়ারি তিনি মানবতার মুক্তি আন্দোলন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন। ১১ই এপ্রিল ২০১৯ তিনি রোকন শপথ গ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা মহানগরী উত্তরের বসুন্ধরা থানা সেক্রেটারি ও গুলশান থানা আমিরের পাশাপাশি মহানগরী উত্তরের কর্ম পরিষদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২০ সালে তিনি বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে সুরা সদস্য নির্বাচিত হন।
মাদরাসা শিক্ষার উন্নয়ন এবং মাদরাসা শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়েও তিনি গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা পালন করেন। ফাজিল কে ডিগ্রী এবং কামিলকে মাস্টার্স এর মান আদায়ের দাবিতে তিনি রাজপথে সোচ্চার ভূমিকা পালন করেন। ২০০৮ সালে তিনি বাংলাদেশ মাদরাসা ছাত্র আন্দোলন পরিষদের আহবায়কের দায়িত্ব পালন করেন। সন্ত্রাস, মাদক ও ইভটিজিং মুক্ত সমাজ গড়ার প্রত্যয় যুবসমাজকে নিয়ে তিনি গঠনমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তিনি বাংলাদেশ যুবকল্যাণ পরিষদের সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও দক্ষিণ এশীয় যুব সংগঠন “South Asian Youth Society” এর chief advisor এর দায়িত্ব পালন করেন।
রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে তিনি ছিলেন সামনের সারিতে। অন্যায় অবিচার জুলুমের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর। আওয়ামী জুলুমবাজ সরকারের ব্যাপক নির্যাতনের শিকার হন তিনি। গ্রেফতার করে তিন দিন ঘুম করে রাখা হয় তাকে। বিগত সময়ে তিনি ৩ বার কারা বরণ করেন, এ সময় প্রায় দুই বছরের বেশি কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে বন্দি ছিলেন, ১৭ দিন রিমান্ডের শিকার হয়েছেন।

তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন পরিচালনার সাথে যুক্ত আছেন। নাঙ্গলকোট, সদর দক্ষিণ, লালমাই এলাকার বহু প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার সাথে যুক্ত থেকে সমাজ উন্নয়নে ভূমিকা পালন করছেন । তিনি নাঙ্গলকোট, সদর দক্ষিণ, লালমাই উন্নয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, নাঙ্গলকোট ছাত্র ফোরাম ঢাকা, চট্টগ্রামস্থ নাঙ্গলকোট ছাত্র ফোরাম এর প্রধান উপদেষ্টা, ঢাকাস্থ নাঙ্গলকোট ফোরামের উপদেষ্টাসহ বহু সংগঠনের সাথে সামাজিক কাজে সম্পৃক্ত থেকে
“উন্নত হোক গ্রামীণ জনপদ
সুখ শান্তি সমৃদ্ধি আসুক ঘরে ঘরে”
এই স্লোগানে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। বিশেষ করে কুমিল্লা-১০ (নাঙ্গলকোট, সদর দক্ষিণ, লালমাই) আসনভুক্ত এলাকার সমাজ ও মানুষের উন্নয়নে নিবেদিত প্রাণ হয়ে ভূমিকা পালন করছেন।

সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাগরিকের সমন্বয়ে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা তার স্বপ্ন।